রহমানের ভালো শুরুও দিতে পারেনি দীর্ঘস্থায়ী নির্ভরতা। অথচ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এই দুই ব্যাটসম্যানকে ঘিরে অনেক প্রত্যাশা ছিল। প্রত্যাশা তাঁরা মেটাতে পারেননি। বাংলাদেশ দলের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দুঃখের নাম সৌম্য-সাব্বির।

বিসিবির ন্যাশনাল গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার নাজমুল আবেদীন ও জাতীয় দলের সাবেক সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের বিশ্লেষণ বলছে, সৌম্যের সমস্যা পুরোপুরিই টেকনিক্যাল। এই ওপেনারের পায়ের নড়াচড়ায় জড়তা দেখছেন তাঁরা। একই ভুল তাই বারবার হচ্ছে। সাব্বির লোয়ার মিডল অর্ডারে যতই সফল হোন, তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরন ও মানসিকতা তিন নম্বরের উপযুক্ত কি না সে প্রশ্ন তুলেছেন নাজমুল আবেদীন। সালাউদ্দিন তো তিন নম্বরে মাহমুদউল্লাহ অথবা সাকিবকেই যোগ্য মনে করেন। তিন নম্বরে সাব্বির যে একেবারেই অচল, তা নয়। তবে বিকেএসপির সাবেক এই কোচের শর্ত, তাঁর খেলায় তিন নম্বর ব্যাটসম্যানের পরিপক্বতা আসতে হবে।

নাজমুল আবেদীনের চোখে সাব্বির খুব ভালো মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। তিনে উঠে আসার পর তাঁকে একটু অচেনা লাগার কারণটাও ধরতে পেরেছেন অভিজ্ঞ এই কোচ, ‘সাব্বির ছোটবেলা থেকে নিজেকে মিডল অর্ডার বা লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেই ভেবে আসছে। ব্যাটসম্যান সাব্বিরের মানসিক গঠনটাই ও রকম। আমার ধারণা, ওপরে উঠিয়ে আনায় সে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির যে দুটি ম্যাচে তিনে ব্যাট করেছেন, দুটিতেই সাব্বিরকে নামতে হয়েছে ইনিংসের প্রথম ওভারে। নাজমুল আবেদীনের দৃষ্টিতে নতুন বলে খেলাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তাঁর জন্য, ‘সাব্বির যেখানে ব্যাট করত, পুরোনো বলই পেত সে। কিন্তু এখন তাকে প্রায়ই নতুন বলের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ইংল্যান্ডে তো শুরুর দিকে বলে মুভমেন্টও থাকত। শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে এই দুই জায়গার ব্যাটিংয়ে পার্থক্য অনেক বেশি।’

সাব্বিরকে নিয়ে প্রায় একই বিশ্লেষণ সালাউদ্দিনেরও। তিনি মনে করেন, তিনে খেলতে হলে সাব্বিরকে আরও পরিণত হতে হবে। ছয়-সাতে বেশির ভাগ সময় একই পরিস্থিতিতে ব্যাট করতে হয়। কিন্তু তিন নম্বর ব্যাটসম্যানের কাছে কখনো উইকেট আঁকড়ে থাকার দাবি থাকে, কখনো তাকে দ্রুত রান তুলতে হয়। সাব্বিরের অপরিপক্বতা দেখছেন তিনি প্রথমটিতে, ‘যে তিন নম্বরের জন্য প্রস্তুত তাকেই সে জায়গায় খেলতে দেওয়া উচিত। কাউকে নিচ থেকে তুলে এনে তিন নম্বর ব্যাটসম্যান বানানোর দরকার নেই। জাতীয় দল গবেষণা করার জায়গা নয়। তিন নম্বরে সাব্বিরের সমস্যা থাকলে কোচের উচিত আগে সেটা ঠিক করে তাকে তিনে আনা।’

তবে এখানে সামান্য দ্বিমত আছে নাজমুল আবেদীনের, ‘এতে লাভ হলে ভালো কথা। কিন্তু এটা করতে গিয়ে আমরা আসল সাব্বিরকে হারিয়ে ফেলতে পারি। এ রকম উদাহরণ আমরা আগেও দেখেছি।’